মানুষের ভালোবাসা পেতে হলে মানুষকে ভালোবাসতে হয়। মানবতার রাজকন্যা প্রিন্সেস ডায়না মানুষকে ভালোবেসে ছিলেন। মানুষও তাকে ভালোবেসেছিল। মৃত্যুর ১৫ বছর পরও মানুষ তাকে ভালোবাসে। আজ থেকে ঠিক ১৫ বছর আগে ৩১ আগষ্ট এই দিনে প্যারিসে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত প্রিন্সেস ডায়না। এই মহীয়সী নারীর ১৫ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার প্রতি প্রতিমুহূতের্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
প্রিন্সেস ডায়ানা ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদের হাজারো নিয়ম-কানুন আর প্রটোকলের
বেড়াজাল ভেঙে বেরিযয়ে এসেছেন সাধারাণ মানুষের কাছে। ছুটে গেছেন আর্ত পীড়িত
যুদ্ধ বিধ্বস্ত অসহায় মানুষের কাছে। এজন্য তাকে ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ থেকে,
রানীর কাছ থেকে ও স্বামী চর্লসের কাছ থেকে হাজারো কথা শুনতে হয়েছে। কিন্তু
তিনি থেমে থাকেননি। নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ছুটে গেছেন
ল্যান্ডমাইন অপসারণের কাজে। ছুটে গেছেন আহত, অসুস্থ শিশুদের পাশে। তিনি
বেঁচে থাকলে হয়তো আমরা পেতাম আরেক মাদার তেরেসা। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন
যুদ্ধ হানাহানি আর মাইনমুক্ত এক বিশ্বের। কিন্তু মর্মান্তিক মৃত্যু তার সে
স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি। তারপরও তিনি পৃথিবীর কোটি মানুষের হৃদয়ে আর
ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে আছেন সোনার বর্ণমালায়।
১১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট প্যারিসে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন
মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত প্রিন্সেস ডায়না। একই সঙ্গে নিহত হন তার প্রেমিক
দোদি আল ফায়েদ। হাহাকার করে ওঠে পৃথিবীজুড়ে হাজারো ভক্তের বুক। কিন্তু
এতদিন পেরিয়ে গেলেও তার মৃত্যু রহস্য অজানাই থেকে গেছে। আপাত দৃষ্টিতে তিনি
দুর্ঘটনায় নিহত হলেও এর পেছনে কারণ খুঁজেছেন অনেকেই। অনেকেই বলেছেন তাকে
হত্যা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দোদির সঙ্গে তার সর্ম্পকটইি ব্রটিশি রাজ
পরবিাররে কট্টর ভাবর্মূতরি প্রতি হুমকইি ছললো। তাই রাজ পরিবার তা মেনে নিতে
পারেনি। কেউ বলেছেন, তাদের গাড়ির চালক মাতাল অবস্থায় ছিলেন। দোদির বাবা
বলেন, এটি একটি হত্যাকান্ড এবং এর পেছনে কাজ করেছে ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্স
এজেন্ট।
দোদি আল ফায়েদের বাবার ব্রিটিশ আইনজীবী মাইকেল ম্যানসফিল্ড দাবি করেছেন,
অস্ত্র ব্যবসায়ীরাই ডায়নাকে হত্য করেছে। তিনি এর পেছনে যুক্তি দিয়েছেন,
ডায়না তার আত্মজীবনীতে ব্রিটেনের অস্ত্র ব্যবসা ও ল্যান্ডমাইন
উৎপাদনকারীদের সম্পর্কে অজানা তথ্য প্রকাশ করে দিতে চেয়েছিলেন। তাই তাকে
হত্যা করা হয়।
ডায়না এ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন এটাই সত্য। কিন্তু মানবিক গুনাবলী আর
ভালোবাসা দিয়ে যে ডায়না কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন, তিনি বেঁচে
আছেন। থাকবেন হাজার বছর। আজ বিশ্বব্যাপী ডায়নার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে
ভক্তরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন, তাকে স্মরণ করছেন।

0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন