You are here : Home »
Home » » শচীন ,ক্যারিয়ার নভেম্বরে শুরু, আরেক নভেম্বরে শেষ?

শচীন ,ক্যারিয়ার নভেম্বরে শুরু, আরেক নভেম্বরে শেষ?

Written By bdnews online on সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ | ১০:০৮ AM

১৯৮৯ সালের নভেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ১৬ বছরের এক কিশোরের। ছোটখাটো হালকা-পাতলা গড়নের সেই খুদে ব্যাটসম্যান মুখোমুখি হয়েছিলেন ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুসদের মতো দুর্ধর্ষ বোলারদের। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ক্রিকেটের বড় সম্পদ, এটা অনেকেই জানতেন। কিন্তু একদিন রেকর্ড বইয়ের পাতায় পাতায় ছড়ানো থাকবে তাঁর নাম, কজনই বা ভেবেছিলেন! ক্যারিয়ারের সেই প্রথম টেস্টটির পর তাঁর নামের পাশে জমা হয়েছিল মাত্র ১৫টি রান। কিন্তু ২৪ বছর পর সেই একই মানুষের পাশে লেখা হয় সর্বোচ্চ ১৯৮টি টেস্ট, সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৮৩৭ রান, সর্বোচ্চ ৫১টি শতকের রেকর্ড। শচীন টেন্ডুলকার এখন ক্রিকেটের সর্বকালের সফলতম ব্যাটসম্যান সন্দেহাতীতভাবেই। ১৬ বছরের সেই কিশোরই এখন চলে এসেছেন ক্যারিয়ারের দ্বারপ্রান্তে। দুই যুগ আগের এক নভেম্বরে যে বিস্ময়কর ক্যারিয়ারের শুরু হয়েছিল, তার অবসানও হয়তো হতে যাচ্ছে আরেক নভেম্বরে। এ বছরের শেষেই ঘরের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি টেস্ট খেলে অবসরের ঘোষণা দিতে পারেন টেন্ডুলকার। ক্রিকেট-বিশ্বকে বেশ কয়েকটি বিস্ময়কর মাইলফলকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন টেন্ডুলকার। টেস্ট-ওয়ানডে, দুই ধরনের ক্রিকেটেই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা, সবচেয়ে বেশি রান, সবচেয়ে বেশি শতক— প্রায় সব কয়টি রেকর্ডই আছে তাঁর দখলে। বিদায়বেলায় ক্রিকেট বিশ্বকে আরও একটি মাইলফলকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে যাচ্ছেন টেন্ডুলকার। ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তাঁর নামের পাশে লেখা হতে যাচ্ছে ২০০টি টেস্ট খেলার রেকর্ডও। অনন্য এই মাইলফলক থেকে মাত্র দুটি ম্যাচ দূরে আছেন ভারতের ক্রিকেট-দেবতা।
অনুমান করা হচ্ছে, এই দুই টেস্ট খেলেই অবসরের চূড়ান্ত ঘোষণাটি দিয়ে ফেলবেন টেন্ডুলকার। আর তাঁর বিদায়ী মঞ্চটা যতটা সম্ভব রঙিন করে তোলার সব ধরনের চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। দেশের মাটিতেই যেন শচীন শেষ টেস্ট দুটি খেলতে পারেন, সে জন্য বিশেষভাবে আয়োজিত হতে যাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটি সফর। আগামী নভেম্বরের এই সফরে এসে দুটি টেস্ট ও পাঁচটি ওয়ানডে খেলবে উইন্ডিজ। শচীন যেন ঘরের মাটিতেই শেষ টেস্টটা খেলতে পারেন, সে জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফরের দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়া হচ্ছে তাঁরই নাড়িপোঁতা মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামকে। আর প্রথম টেস্টটি হয়তো অনুষ্ঠিত হতে পারে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে।
বাহ্যিক আয়োজন তো সব সম্পন্ন হয়েই গেছে। কিন্তু শচীন কি পারবেন ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়ে নিজের বিদায়ী টেস্ট দুটি স্মরণীয় করে রাখতে? গত তিনটি বছর দেশের মাটিতে একটি শতকেরও দেখা পাননি টেন্ডুলকার। সর্বশেষ ব্যাঙ্গালুরুতে ২১৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, ২০১০ সালে। তারপর ভারতের মাটিতে ১৪টি টেস্ট খেললেও ১০০ রানের কোটা পূর্ণ করতে পারেননি। শেষবারের মতো টেস্ট সেঞ্চুরি করেছেন, সেটাও অনেক দিন হয়ে গেছে। ২০১১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শচীনের শেষ টেস্ট সেঞ্চুরিটা এসেছিল কেপটাউনে। তারপর ২১টি টেস্টে শতকবঞ্চিত আছেন টেন্ডুলকার। অথচ গড়ে প্রতি চারটি টেস্টে একটি করে শতক করেছেন ভারতের এই ব্যাটিং কিংবদন্তি।
ক্যারিয়ারের অন্তিম সময়টাতে ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারবেন কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে ভারতের মাটিতেই বিদায় বলতে পারলে হয়তো খুশিই হবেন টেন্ডুলকার। কারণ, এখানেই তাঁর ২৪ বছরের বর্ণাঢ্য ক্রিকেট-ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু স্মৃতি জড়িয়ে আছে।
১৯৮৮ সালে রনজি ট্রফিতে সবচেয়ে কমবয়সী ব্যাটসম্যান হিসেবে শতকের রেকর্ড দিয়েই হয়েছিল শুরুটা। ১৯৯৬ সালে ভারতের অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকটাও হয়েছিল দেশের মাটিতেই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচে সাত উইকেটের জয় পেয়েছিল ভারত। আর সর্বশেষ ২০১১ সালের বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদটাও তিনি পেয়েছেন ঘরের মাঠ মুম্বাইয়ে।
ওয়ানডেকে বিদায় জানিয়েছেন আগেই। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি তো সেভাবে খেললেনই না। এবার টেস্টকেও বিদায় জানানোর দ্বারপ্রান্তে। টেন্ডুলকারবিহীন ক্রিকেট? এ যে বিরাট এক শূন্যতা!
Share this article :

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
E-mail : newsbd4@gmail.com
Copyright © 2013-14. XtremeNews Bangladesh Inc. - All Rights Reserved
Powered by Xtreem News ICT Team