ওয়েব ক্যাম ব্যবহার করে ভিডিও চ্যাটিং এখন বেশ জনপ্রিয়। আর এই সুবিধা নিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতে বসে আছে দুর্বৃত্তরা।
অপরিচিত কারও সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ও অনলাইন ডেটিং সাইটগুলোতে
এই ভিডিও চ্যাটিং বিপদের কারণ হতে পারে। ওয়েব ক্যামে বা অনলাইনে অপরিচিত
কারও সঙ্গে অসচেতনভাবে ডেটিংয়ের অর্থ এখন প্রতারণার ফাঁদে পা দেয়া।
অনলাইনে ওয়েবক্যামে সুন্দরী তরুণী বা যুবকের কথার ফাঁদে পড়ে ধোঁকা খাচ্ছেন
অনেকেই, খোয়াতে হচ্ছে অর্থ। সুন্দর ছবি, ভিডিওর আড়ালে কারা রয়েছে তা জানা
অনেক সময় দুষ্কর। একটু সাবধানতাই পারে প্রতারণার খপ্পর থেকে বাঁচাতে।
ডেটিং প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে খুয়েছে লাখ ডলার
ংঁংঢ়বপঃংকারেন ভ্যাসিউর (৬৩) ও তাঁর মেয়ে ট্রেসি (৪২)অনলাইনে ডেটিং
প্রতারণার ফাঁদ পেতে বাণিজ্য ভালোই জমিয়েছিলেন মা ও মেয়ে। ৪০ টি দেশের ৩৭৪
জনকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ১১ লাখ মার্কিন ডলার হাতিয়ে নেন তাঁরা। শেষে
আইনি গ্যাঁড়াকলে পড়ে এখন জেলের ঘানি টানছেন দুজন। খবর বিবিসির।
প্রতারণা মামলায় দন্ডাদেশ পাওয়া এ দুজন হলেন কারেন ভ্যাসিউর (৬৩) ও তাঁর মেয়ে ট্রেসি (৪২)। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভারের বাসিন্দা।
সম্প্রতি কলোরাডোর আদালত মাকে ১২ ও মেয়েকে ১৫ বছরের কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন।
২০১২ সালে অনলাইনে প্রতারণার ঘটনায় তাদের গ্রেফতার করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ভাষ্য, এ দুজন
অনলাইনে নিজেদের যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয়
দিয়ে লোকজনের সঙ্গে প্রেম করতে চাইতেন। তাঁরা এমনভাবে নিজেদের উপস্থাপন
করতেন, যাতে তাদের খপ্পরে পড়া লোকজনের মনে সহমর্মিতা জাগতো। মনে হতো,
প্রেমিক খুঁজছেন তাঁরা।
তাঁদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে অনেক ব্যক্তিকেই অর্থ খোয়াতে হয়েছে। এভাবে
তাঁরা আইন ভাঙার পাশাপাশি অনেক মানুষের মন ভেঙেছে বলেও দাবি করেছেন দেশটির
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
কলোরাডোর অ্যাটর্নি জেনারেল জন সুদার্স জানান, ‘‘প্রেমের নামে ও
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর নাম ভাঙিয়ে যে অপরাধ তারা করেছে, তার
উপযুক্ত শাস্তি হয়েছে।’’
কলোরাডোর অ্যাটর্নি জেনারেল জাচিয়েছেন, প্রতারকরা অনলাইন ডেটিং প্রতারণার
বড় একটি নেটওয়ার্ক চালাতেন যে নেটওয়ার্কের অন্য সদস্যদের ধরা সম্ভব হয়নি। এ
প্রতারক দলের অন্য সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট বা ডেটিং
সার্ভিসগুলোতে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলার নানা চেষ্টা
করতেন। কেউ একজন সফল হলে প্রতারণার খপ্পরে পড়া ব্যক্তিকে নানা গল্পের ফাঁদে
ফেলা হতো।
অনলাইন ডেটিং
গল্পের এক পর্যায়ে নিজেদের দুর্দশার গল্প ফেঁদে অর্থ সাহায্য চাইতেন।
প্রতারণার ফাঁদে পড়া ব্যক্তিকে ফোন কল করা, তাঁর কাছে বেড়াতে চলে আসা
প্রভৃতি বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ চাওয়া হতো। যখন কেউ অর্থ দিতে রাজি
হত, তখন ট্রেসি ও তার মা সেনাবাহিনীর এজেন্ট পরিচয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্টে
অর্থ সংগ্রহ করতেন ।
এভাবেই প্রতারণার ফাঁদে ফেলে একবারে ৫৯ হাজার মার্কিন ডলার প্রতারণা করার নজিরও পেয়েছেন আদালত।
প্রতারণা থেকে পাওয়া অর্থ এই দুজন ছাড়াও বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা অন্যান্য
সদস্যদের মধ্যে ভাগ হয়ে যেত। সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, যুক্তরাজ্য,
ইকুয়েডর. নাইজেরিয়াতে এ দলের সদস্যরা এখনও সক্রিয়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন